200
+
কৌতুহলী শিক্ষার্থী
২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়া আমার স্কুল প্রজেক্ট (এএসপি) বা Aamar School Project (ASP) হলো একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও আঞ্চলিকতা বিরোধী একটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান। যা রাজধরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন যেসকল শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চতর শিক্ষায় অধ্যায়নরত রয়েছে তাদের দ্বারা পরিচালিত।
উচ্চতর শিক্ষা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সম্মুখ ধারণা প্রদান করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের কর্মশালা পরিচালনা করা।
গণিত ও বিজ্ঞান ভীতি দূরীকরণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা।
বিজ্ঞান ও গণিতের সাম্প্রতিক বিষয়াবলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা প্রদাণ করা।
গণিত ও বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তৈরি করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা।
গণিত, বিজ্ঞান ও ভাষা সম্পর্কে দক্ষতা তৈরি করা।
সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিবর্গের সাথে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখা।
গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক কর্মশালা, অলিম্পিয়াড, উৎসব ও সভা সেমিনারের আয়োজন করা।
ভাষা ও বিতর্ক বিষয়ক কর্মশালা ও উৎসব আয়োজন করা।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রত্যাশী এমন শিক্ষার্থীদের সাধ্যমত সহযোগিতা করা এবং তাদেরকে উৎসাহিত করতে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা।
পেছনের গল্প
রাজধরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সৎ, নিষ্ঠাবান, দায়িত্বশীল, সুশৃঙ্খল, জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং কর্মমুখী জনসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে অত্র এলাকার আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে। এলাকার সাংস্কৃতিক উন্নয়নেও রাজধরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে অগণিত তরুণ তরুণী তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পৌঁছাবার জন্য দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
রাজধরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে অনেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত আছেন, কেউবা উচ্চশিক্ষা শেষে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। তা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে যেমন রয়েছে পর্যাপ্ত ধারণার অভাব, তেমনি রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগেরও অভাব। বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা প্রতিটি শিক্ষার্থীই অনুভব করে। উচ্চতর শিক্ষা সম্পর্কে সঠিক তথ্যের পাশাপাশি গণিত, বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি, ভাষা ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনস্বরূপ একটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত ও প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ। এমন একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রথম ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. আশিক রেজা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক জনাব নীলমনি মন্ডল এর সাথে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি তার ব্যাচের (এসএসসি-২০১৬) অন্য দুই শিক্ষার্থী তানভীর রানা রাব্বি ও গোলাম রাব্বি এর সাথে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পরবর্তীতে তাঁরা জনাব নীলমণি মন্ডল এর সাথে পুনরায় দেখা করে তাদের কর্মপরিকল্পনা ব্যক্ত করেন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানকক্ষে প্রথম একটি গণিত বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করেন।
এরপর থেকে জনাব নীলমণি মন্ডল এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মো. আশিক রেজা, তানভীর রানা রাব্বি ও গোলাম রাব্বি এই তিনজনের পরিচালনায় গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক বেশ কয়েকটি কর্মশালা পরিচালিত হয়।
এই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ ই ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে "আমার স্কুল গণিত অলিম্পিয়াড" শিরোনামে একটি গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। শুরু থেকেই সংগঠনের নাম মৌখিকভাবে আমার স্কুল প্রজেক্ট বলে এলেও এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমেই সংগঠনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে “আমার স্কুল প্রজেক্ট” লেখা শুরু হয়। উক্ত অলিম্পিয়াডে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২০১৬ সালের এসএসসি ব্যাচের মো. আশিক রেজা, তানভীর রানা রাব্বি, মো. জিল্লু রহমান, মোবারক হোসেন এবং ২০১৫ সালের এসএসসি ব্যাচের নিয়ন মোল্লা, পিয়াস মোল্লা ও রেজওয়ান রাব্বি। এটিই ছিল “আমার স্কুল প্রজেক্ট” কর্তৃক আয়োজিত প্রথম গণিত অলিম্পিয়াড।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে আমার স্কুল প্রজেক্ট। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীবৃন্দ শিক্ষকমণ্ডলী তথা অত্র এলাকার জনসাধারণের প্রত্যাশা “আমার স্কুল প্রজেক্ট” বিজ্ঞানমনস্ক আদর্শ জাতি গঠনে প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্য ও জ্ঞানের আদান-প্রদানের সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করবে। এ সংগঠনের সকল সদস্য ও কর্মীবৃন্দ সেই প্রত্যাশা পূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।